বাংলা আর্টিকেল লিখার নিয়ম
বাংলা আর্টিকেল লেখা একটি সৃজনশীল এবং বিশ্লেষণাত্মক কাজ, যা ভাষার প্রতি গভীর
জ্ঞান ও সঠিক উপস্থাপনার মাধ্যমে পাঠকদের মনোযোগ আকর্ষণ করে। একজন সফল আর্টিকেল
লেখক হওয়ার জন্য শুধুমাত্র ভাষার নিয়ম-কানুন জানা যথেষ্ট নয়; প্রয়োজন
সুন্দরভাবে ভাব প্রকাশ এবং পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখা।
বাংলা আর্টিকেল লেখার সঠিক পদ্ধতি জানা থাকলে, তা পাঠকের কাছে কার্যকরী এবং
অর্থবহ হবে। এই নিবন্ধে, বাংলা আর্টিকেল লেখার বিভিন্ন নিয়ম, পদ্ধতি এবং
প্রয়োজনীয় দক্ষতা নিয়ে বিশদে আলোচনা করা হবে।
পেজ সূচিপত্রঃ বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম (একটি পূর্ণাঙ্গ গাইড)
বিষয় নির্বাচন ও পরিকল্পনা
আর্টিকেল লেখার প্রথম ধাপ হল একটি নির্দিষ্ট বিষয় নির্বাচন করা। একটি
সুনির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে লেখার সময় আপনার লেখার লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য
পরিষ্কার হওয়া জরুরি। বিষয় নির্বাচন করার সময় যেসব বিষয়ে মনোযোগ দিতে
হবে।
ক. পাঠকের আগ্রহ বিবেচনা করাঃ
আর্টিকেল লিখতে হলে প্রথমেই জানতে হবে, আপনার লক্ষ্য পাঠক কারা এবং তারা কী
ধরনের বিষয় পড়তে আগ্রহী। পাঠকের প্রয়োজন এবং আগ্রহের উপর ভিত্তি করে বিষয়
নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার পাঠক
শিক্ষার্থীরা হয়, তবে আপনি তাদের শিক্ষামূলক আর্টিকেল প্রদান করতে পারেন।
আপনার লেখা বিষয় সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। যদি বিষয় সম্পর্কে
আপনার যথেষ্ট জ্ঞান না থাকে, তাহলে লেখার আগে গবেষণা করা জরুরি। এটি আপনার
লেখাকে বিশ্বাসযোগ্য এবং তথ্যপূর্ণ করে তুলবে।
প্রত্যেক লেখার একটি উদ্দেশ্য থাকে। আর্টিকেলটি কি শুধুমাত্র তথ্য দেওয়ার
জন্য, নাকি পাঠককে কোনো বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করার জন্য? আপনার লেখার উদ্দেশ্য
পরিষ্কার হওয়া দরকার, যাতে আপনি সেই অনুযায়ী আপনার লেখা সাজাতে পারেন।
তথ্য সংগ্রহ ও গবেষণা
যেকোনো আর্টিকেল লেখার আগে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি
যেটাই লেখেন না কেন, তার ভিত্তিতে তথ্য থাকতে হবে। তথ্যসমৃদ্ধ লেখা পাঠককে
বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় এবং এটি লেখার মান বাড়িয়ে তোলে। গবেষণা করার জন্য
নিম্নলিখিত পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে।
প্রথমে, আপনার নিজের জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে তথ্য সংগ্রহ করা
শুরু করুন। আপনি যদি কোনো বিশেষ ক্ষেত্র বা বিষয় সম্পর্কে অভিজ্ঞ হন, তাহলে
সেই তথ্য আপনার লেখায় অন্তর্ভুক্ত করুন। এটি আপনার লেখাকে স্বকীয় এবং মৌলিক
করে তুলবে।
খ. মাধ্যমিক তথ্য সংগ্রহঃ
ইন্টারনেট, বই, ম্যাগাজিন, জার্নাল, এবং নিবন্ধ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা যেতে
পারে। এই মাধ্যমগুলোর মাধ্যমে আপনি বিশদ এবং নির্ভুল তথ্য পেতে পারেন। তবে,
ইন্টারনেট থেকে তথ্য সংগ্রহ করার সময় উৎসের বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করা জরুরি।
ভুল বা মিথ্যা তথ্য ব্যবহার করা লেখার মান ক্ষুণ্ণ করে এবং পাঠকের আস্থা
হারায়।
গ. বিষয়ের ওপর নির্ভর করে বিশেষজ্ঞের মতামতঃ
কিছু বিষয় এমন থাকে, যেগুলোর জন্য বিশেষজ্ঞের মতামত জানা অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, স্বাস্থ্যবিষয়ক বা প্রযুক্তি সংক্রান্ত কোনো বিষয় হলে,
সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য বা তাদের গবেষণার ওপর ভিত্তি করে
লেখা উচিত। এটি আপনার লেখার গভীরতা বাড়ায় এবং বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি করে।
আরো পড়ুন ঃ বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং এ সবচেয়ে ডিম্যান্ডেবল সেক্টর কোনটি
আর্টিকেলের কাঠামো নির্ধারণ
একটি ভালো আর্টিকেলের জন্য সঠিক কাঠামো প্রয়োজন। যেকোনো রচনার মতো বাংলা
আর্টিকেলেও একটি সূচনা, মধ্যভাগ এবং উপসংহার থাকা উচিত। সঠিকভাবে আর্টিকেল
গঠন করলে তা পড়তে সহজ হয় এবং পাঠক পুরো লেখাটি শেষ করতে আগ্রহী হয়।
আর্টিকেলের কাঠামো নিম্নরূপ হতে পারে।
আর্টিকেলের শুরুতে একটি আকর্ষণীয় ভূমিকা থাকা জরুরি, যা পাঠকের মনোযোগ
আকর্ষণ করবে। ভূমিকা অংশে বিষয়টির প্রেক্ষাপট, গুরুত্ব এবং লেখার উদ্দেশ্য
উল্লেখ করতে হবে। এটি সংক্ষিপ্ত এবং প্রাসঙ্গিক হওয়া উচিত। ভূমিকা লেখার
সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন পাঠক শুরু থেকেই লেখার সঙ্গে যুক্ত থাকে এবং তারা
পুরো লেখাটি পড়তে আগ্রহী হয়।
এই অংশে আপনার মূল বক্তব্য ও তথ্য উপস্থাপন করতে হবে। মূল অংশটি সাধারণত
কয়েকটি অনুচ্ছেদে বিভক্ত করা হয়, যেখানে প্রতিটি অনুচ্ছেদে নির্দিষ্ট একটি
পয়েন্ট বা উপবিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। প্রতিটি পয়েন্টকে সমর্থন করার
জন্য যুক্তিসম্মত তথ্য এবং উদাহরণ ব্যবহার করা প্রয়োজন।
ক্রম অনুযায়ী লেখা: চিন্তা-ভাবনার একটি ধারাবাহিকতা বজায় রেখে বিষয়বস্তু
উপস্থাপন করা উচিত।
সংক্ষিপ্ত অনুচ্ছেদ: দীর্ঘ অনুচ্ছেদ লেখার পরিবর্তে সংক্ষিপ্ত ও সুস্পষ্ট
অনুচ্ছেদ লেখার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
শিরোনাম ও উপশিরোনাম: বড় আর্টিকেলে বিষয়ভিত্তিক শিরোনাম ও উপশিরোনাম
ব্যবহার করা উচিত, যাতে পাঠক সহজে বিষয়বস্তুর মূল বক্তব্য খুঁজে পায়।
গ. উপসংহার (Conclusion):
আর্টিকেলের শেষে একটি উপসংহার থাকতে হবে, যা পুরো লেখার সারাংশ তুলে ধরবে।
উপসংহারে মূল বক্তব্যগুলো পুনর্ব্যক্ত করা যেতে পারে এবং ভবিষ্যতের দিক
নির্দেশনা বা লেখকের নিজস্ব মতামতও দেওয়া যেতে পারে। এটি সংক্ষিপ্ত হওয়া
উচিত এবং একটি সমাপ্তি টানবে।
ভাষার ব্যবহার ও রচনা শৈলী
বাংলা আর্টিকেল লেখার সময় ভাষার শৈলী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুন্দর ও
প্রাঞ্জল ভাষায় লেখা আর্টিকেল পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখতে সক্ষম হয়। ভাষার
শৈলী ও ব্যবহার নিয়ে কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবেঃ
ক. সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষা ব্যবহারঃ
যতটা সম্ভব সহজ ভাষা ব্যবহার করা উচিত, যাতে পাঠক সহজেই লেখার অর্থ বুঝতে
পারে। অত্যধিক জটিল এবং দুর্বোধ্য শব্দ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
সাধারণত, সহজ ও সরল বাক্য গঠন পাঠকের জন্য সুবিধাজনক হয়।
খ. আঞ্চলিক ভাষা পরিহার করাঃ
বাংলা আর্টিকেল লেখার সময় আঞ্চলিক ভাষার পরিবর্তে শুদ্ধ বাংলা ব্যবহার করা
উচিত। প্রমিত বাংলা ভাষার ব্যবহার লেখার মান বাড়ায় এবং একে একটি পেশাদার
রূপ দেয়। তবে, প্রয়োজন অনুযায়ী কথোপকথনের ভাষায় বা পাঠকের সাথে
সম্পৃক্ততা তৈরি করতে স্থানীয় শব্দ বা ভাব প্রকাশ করা যেতে পারে, কিন্তু তা
সীমিত রাখাই ভালো।
আর্টিকেল লেখার সময় পাঠ্য ভাষা আনুষ্ঠানিক হওয়া উচিত এবং তথ্যসমৃদ্ধ হতে
হবে। অপ্রয়োজনীয় তথ্য, পুনরাবৃত্তি, বা অবাস্তব চিন্তা থেকে বিরত থাকতে
হবে। বিষয়টি যেভাবে লেখার উদ্দেশ্যে নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটাই গুরুত্বের
সাথে তুলে ধরতে হবে।
ঘ. উদাহরণ ও যুক্তি ব্যবহার করাঃ
পাঠকের কাছে আপনার বক্তব্যকে আরও বিশ্বাসযোগ্য ও পরিষ্কার করে তুলতে
উদাহরণ এবং যুক্তি ব্যবহার করা উচিত। যেমন, যদি আপনি কোনো সমস্যা নিয়ে
আলোচনা করেন, তাহলে তার সমাধান হিসেবে কী কী পদ্ধতি প্রয়োগ করা যেতে পারে,
তা উদাহরণের মাধ্যমে তুলে ধরা উচিত।
বানান ও ব্যাকরণ সঠিক রাখা
বানান ও ব্যাকরণ সঠিক রাখা একটি আর্টিকেলের মান বজায় রাখার অন্যতম প্রধান
দিক। লেখার সময় ভুল বানান বা ভুল ব্যাকরণ ব্যবহার করলে তা লেখার গুণমানকে
ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং পাঠকের মনোযোগ হারায়। লেখার আগে বা পরে একাধিকবার বানান
ও ব্যাকরণ যাচাই করা উচিত। বর্তমানে অনলাইন বানান যাচাইকরণ সরঞ্জামও পাওয়া
যায়, যা ব্যবহার করা যেতে পারে।
ক. শব্দ চয়নঃ
আর্টিকেলে সঠিক শব্দের ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ। শব্দের অর্থ সঠিকভাবে বুঝে তার
প্রয়োগ করতে হবে, যাতে কোনো দ্ব্যর্থতা তৈরি না হয়। ভুল শব্দের প্রয়োগ
পাঠককে বিভ্রান্ত করতে পারে এবং লেখার মান নষ্ট করতে পারে।
খ. সংযোজক শব্দের ব্যবহারঃ
বাক্যের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করতে সংযোজক শব্দ যেমন: এবং, কিন্তু, তাছাড়া,
যদিও ইত্যাদি সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। এটি বাক্যের গতি বাড়ায় এবং পাঠকের
কাছে পাঠকে প্রাঞ্জল করে তোলে।
পুনঃপর্যালোচনা ও সম্পাদনা
আর্টিকেল লেখার পর পুনঃপর্যালোচনা ও সম্পাদনা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লেখা আরও মানসম্মত, সঠিক ও প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে।
পুনঃপর্যালোচনা ও সম্পাদনা করতে নিম্নোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করতে পারেন:
ক) বিরতি নিনঃ
লেখা শেষ করার পর কিছুক্ষণ বিরতি নিন। এটি আপনার মনের সতেজতা ফিরিয়ে এনে
ভুলগুলো সহজে ধরতে সহায়তা করবে।
খ) প্রথম পাঠ “সামগ্রিক পর্যালোচনা”
প্রথমবার পুরো লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এবং দেখুন, মূল বার্তা
পরিষ্কারভাবে প্রকাশ পাচ্ছে কিনা। যদি মনে হয় লেখা যথাযথভাবে সংক্ষিপ্ত,
সুসংহত, এবং পাঠককে আকর্ষণীয় মনে হবে না, তবে সেই অংশগুলোর পুনরায় চিন্তা
করুন।
গ) বিষয়বস্তু সংশোধনঃ
লেখার প্রাসঙ্গিকতা এবং নির্ভুলতা নিশ্চিত করতে তথ্য যাচাই করুন। প্রয়োজন
হলে তথ্যসূত্র যোগ করুন এবং যেসব অংশ পাঠকের প্রশ্ন জাগাতে পারে, সেগুলো
আরও স্পষ্ট করুন।
ঘ) গঠন এবং বিন্যাস পরীক্ষাঃ
লেখায় প্যারাগ্রাফ এবং বাক্যের গঠন যাচাই করুন। বাক্যগুলো সংক্ষিপ্ত ও
স্পষ্ট হওয়া উচিত এবং প্যারাগ্রাফগুলো পরস্পরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে
জুড়ে থাকা উচিত।
ঙ) ভাষার ব্যবহার এবং ব্যাকরণ সংশোধনঃ
ভাষার ব্যবহার সহজ, পরিষ্কার এবং প্রাসঙ্গিক হওয়া জরুরি। লেখার মধ্যে
গ্রামার, বানান, এবং যতিচিহ্নের ভুল থাকলে তা সংশোধন করুন।
চ) অতিরিক্ত শব্দ ও বাক্য বাদ দিনঃ
লেখায় অপ্রয়োজনীয় শব্দ, দীর্ঘ বাক্য, বা পুনরাবৃত্তি থাকলে তা বাদ দিন।
এটি লেখার গতি বাড়াবে এবং পাঠকের জন্য পড়া সহজতর করবে।
ছ) ভুল সংশোধন করাঃ
আর্টিকেল লেখা শেষ হওয়ার পর একাধিকবার পড়ে কোনো ভুলত্রুটি আছে কিনা তা
সংশোধন করা প্রয়োজন। বিশেষত বানান, ব্যাকরণ, ও বাক্য গঠনের ভুলগুলো যাচাই
করা জরুরি। অনেক সময় লেখার সময় যে ভুলগুলো ধরা পড়ে না, সেগুলো পরবর্তীতে
পুনরায় পড়লে চোখে পড়ে। এজন্য আর্টিকেল লেখা শেষে পুনঃপর্যালোচনা করা
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জ) তৃতীয় পক্ষের মতামত নেওয়াঃ
কিছু সময় তৃতীয় কারো মতামত নেওয়া আপনার লেখার মান উন্নত করতে সাহায্য করতে
পারে। বিশেষ করে, যদি আপনার লেখা একটি বড় বা জটিল বিষয় নিয়ে হয়, তাহলে
অন্য কারো থেকে ফিডব্যাক নেওয়া সঠিক সিদ্ধান্ত। তৃতীয় পক্ষের পাঠক সাধারণত
লেখার যে দুর্বলতা বা অস্পষ্টতা আছে তা তুলে ধরতে পারে, যা লেখকের চোখে পড়ে
না।
ঝ) চূড়ান্ত পাঠ “সম্পাদনা পরীক্ষা”
সব সংশোধন শেষ হলে পুনরায় পুরো লেখাটি পড়ুন। দেখুন, লেখার বিষয়বস্তু,
ভাষা এবং ব্যাকরণ সবই সঠিক হয়েছে কিনা। এটি লেখার সর্বশেষ চূড়ান্ত
পর্যায়।
এই ধাপগুলো অনুসরণ করলে লেখা আরও উন্নত, মনোযোগ কেড়ে নেওয়ার মতো, এবং
পেশাগতভাবে উপস্থাপনযোগ্য হবে।
আকর্ষণীয় শিরোনাম এবং উপশিরোনাম তৈরি করা
একটি আর্টিকেল আকর্ষণীয় করতে শিরোনাম এবং উপশিরোনাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে। একটি আকর্ষণীয় শিরোনাম পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করে এবং তাকে
পুরো লেখাটি পড়তে উদ্বুদ্ধ করে। শিরোনাম অবশ্যই সংক্ষিপ্ত, স্পষ্ট এবং
বিষয়বস্তু সম্পর্কে ধারণা প্রদানকারী হতে হবে।
ক. শিরোনামঃ
শিরোনাম এমন হতে হবে, যা পাঠককে আর্টিকেলের মূল বিষয়ে দ্রুত ধারণা দেয় এবং
আগ্রহী করে তোলে। উদাহরণস্বরূপ, "বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম" শিরোনামটি একটি
সুনির্দিষ্ট ধারণা দেয় যে এটি আর্টিকেল লেখার কৌশল নিয়ে আলোচনা করবে।
খ. উপশিরোনামঃ
বড় আর্টিকেলে বিভিন্ন অংশকে ভাগ করে লেখার জন্য উপশিরোনাম অত্যন্ত কার্যকরী।
এটি লেখার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং পাঠককে নির্দিষ্ট অংশগুলো
সহজে খুঁজে পেতে সহায়তা করে। উপশিরোনামগুলো ছোট ও সুনির্দিষ্ট হওয়া উচিত,
যেন তা পাঠকের জন্য সহায়ক হয়।
পাঠকের সাথে সংযোগ তৈরি করা
আর্টিকেল লেখার সময় পাঠকের সাথে সংযোগ তৈরি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাঠকের
দৃষ্টিকোণ থেকে লেখার বিষয়টি তুলে ধরা উচিত, যাতে তারা লেখার সাথে সম্পৃক্ত
থাকতে পারে। লেখায় ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশ করতে গিয়ে পাঠকের প্রয়োজনের
দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। পাঠকের সমস্যার সমাধান বা প্রশ্নের উত্তর দেওয়া
হলে, তারা লেখাটিকে আরও গুরুত্ব দিয়ে পড়বে।
নিয়মিত চর্চা করা
একজন দক্ষ আর্টিকেল লেখক হতে গেলে নিয়মিত লেখার চর্চা করতে হবে। লেখার সময়
বিভিন্ন বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যেতে পারে, যেমন নতুন ধরনের শৈলী, ভিন্ন
কাঠামো বা বিভিন্ন ধরনের বিষয়বস্তু নিয়ে লেখা। নিয়মিত চর্চা আপনাকে আরও
দক্ষ ও সৃষ্টিশীল লেখক হতে সাহায্য করবে এবং ধীরে ধীরে আপনার লেখার মানও
বৃদ্ধি পাবে।
উপসংহারঃ আমাদের শেষ কথা
বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়মগুলো সঠিকভাবে মেনে চললে এবং ধীরে ধীরে এই
দক্ষতাগুলো আয়ত্ত করা গেলে একজন সফল আর্টিকেল লেখক হওয়া সম্ভব। বিষয়
নির্বাচন থেকে শুরু করে ভাষার শৈলী, গবেষণা, উপস্থাপনা এবং পুনঃপর্যালোচনা
প্রতিটি ধাপই গুরুত্বপূর্ণ। নির্দিষ্ট একটি লক্ষ্য রেখে যদি নিয়মিত লেখার
অভ্যাস করা যায়, তাহলে লেখার মান উন্নত হয় এবং পাঠকের আগ্রহও ধরে রাখা
সম্ভব হয়। সঠিক পদ্ধতি এবং ধৈর্য নিয়ে এগোলে বাংলা ভাষায় প্রাঞ্জল ও
তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেল লেখা একটি সহজ এবং আনন্দদায়ক কাজ হয়ে উঠতে পারে।
কিনলে আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url