চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার চককীর্তি ইউনিয়নের রানীবাড়ি চাঁদপুর একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রাম। এই গ্রামের প্রতিটি ইট পাথর ও মাটি যেন বহন করে শত বছরের ইতিহাস ও সংস্কৃতির গল্প। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা এই গ্রামটি শুধু ঐতিহ্যই নয়, শিক্ষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।

এই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এম. এম. এইচ. মনির, পিতাঃ আলহাজ্ব মোঃ সেতাউর রহমান। মনিরের শৈশব কাটে এই গ্রামেই। গ্রামটির সরলতা, সামাজিক বন্ধন এবং শিক্ষার প্রতি মানুষের আগ্রহ তার মানসিকতা ও ব্যক্তিত্ব গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার চককীত্তি ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী গ্রাম রানীবাড়ী চাঁদপুর।চাঁদপুর গ্রামের এক উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হল চাঁদপুর দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়টি শুধুমাত্র শিক্ষার একটি কেন্দ্র নয়, বরং এটি গ্রামের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি আলোকবর্তিকা। 

এম. এম. এইচ. মনির ১৯৯৯ সালে এই বিদ্যালয় থেকে এস এস সি পাস করেন। এখান থেকে শিক্ষা জীবন শুরু করে তিনি জ্ঞান অর্জনের পথে এগিয়ে যান এবং নিজের লক্ষ্য পূরণের দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হন।

রানীবাড়ি চাঁদপুর গ্রাম তার ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত। এখানকার মানুষগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সম্প্রীতি নিতে পরিবেশ রয়েছে, তা দেশের গ্রামীণ জীবনের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। মহানন্দা নদীর পাশ ঘিরে গাছ-গাছালি এবং মাঠের এক বিশাল প্রান্তর যেন মনকে ছুঁয়ে যায়। মনিরের জীবনে এ গ্রামটির প্রভাব সুদূরপ্রসারী।

রাজশাহী শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হল রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজ। এটি শুধু একটি কলেজ নয়, বরং জ্ঞান ও শিক্ষার এক উজ্জ্বল বাতিঘর। শিক্ষা ও সংস্কৃতির নগরী রাজশাহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বহু শিক্ষার্থীর জীবনে গৌরবময় স্মৃতি তৈরি করেছে।

এম. এম. এইচ. মনির এই প্রতিষ্ঠানের একজন গর্বিত প্রাক্তন শিক্ষার্থী। তিনি ২০০১ সালে এখান থেকে এইচএসসি পাশ করেন। কলেজের পরিবেশ, দক্ষ শিক্ষকবৃন্দের পাঠদান এবং ছাত্রদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তার জীবন গঠনে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে।

রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজ প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে শিক্ষার মান ও শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে। কলেজটি শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত হওয়ায় এটি সহজেই শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানোর মতো একটি আদর্শ জায়গা। এর সুচারু পরিকল্পিত ক্যাম্পাস, সুশৃংখল পাঠদান এবং বহুমুখী সহ শিক্ষামূলক কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের মানসিক ও বৌদ্ধিক বিকাশের সাহায্য করে।।

এম এম. এইচ. মনির ছাত্র জীবনের স্মরণীয় একটি অধ্যায় হল রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজ।  এখানে পড়া কালীন সময়ে তার মাঝে অধ্যবসায়, দায়িত্ববোধ এবং সঠিক সময়ের কাজ শেষ করার মানসিকতা গড়ে ওঠে। কলেজের শিক্ষকদের স্নেহময় দিকনির্দেশনা, তার জীবনে আত্মবিশ্বাসের ভিত্তি স্থাপন করে। 

রাজশাহী শহরের পরিবেশ, যেখানে শিল্প-সাহিত্য এবং সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটে, সেটি মনিরের শিক্ষা জীবন কেউ প্রভাবিত করেছে। এখানে কাটানো সময় তার দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রসারিত করে এবং তাকে ভবিষ্যতের মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত করে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানটি শুধু উচ্চশিক্ষার কেন্দ্র নয় বরং জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়ার একটি বাতিঘর। এখান থেকে লাখো শিক্ষার্থী তাদের জীবন গঠনের সোপান তৈরি করেছেন।এরই ধারাবাহিকতায় এম. এম. এইচ. মনির রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি (সম্মান) এবং এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করে এক অনন্য অর্জন ও শিক্ষাজীবনের গল্প তৈরি করেছেন। 

২০০৭ সালের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যান বিষয়ে বিএসসি (সম্মান) ডিগ্রী অর্জন করেন এম. এম. এইচ. মনির। এটি ছিল তার জ্ঞান অর্জনের প্রথম মাইল ফলক। এই সময়কালে তিনি পরিসংখ্যানের গভীর তথ্য ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি গাণিতিক দক্ষতা এবং বিশ্লেষণাত্মক চিন্তাধারার দক্ষতা লাভ করেন। 

পরবর্তী বছর, ২০০৮ সালে তিনি পরিসংখ্যান বিষয়ে এম এস সি ডিগ্রী অর্জন করেন। এম এস সি পর্যায়ের পড়াশোনায় তিনি আরো গভীরতর গবেষণামূলক কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। বাস্তব জীবনের প্রয়োগ সম্পর্কে আরো সম্মুখ ধারণা দেয়।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দর এবং অনুপ্রেরণাদায়ক পরিবেশ শিক্ষার্থীদের মেধা ও সৃজনশীলতার বিকাশের এক আদর্শ স্থান। ক্যাম্পাস জীবনের প্রতিটি দিন ছিল শিক্ষার পাশাপাশি বন্ধুত্ত্ব, সংস্কৃতি এবং আত্ম উন্নয়নের এক সমন্বিত অভিজ্ঞতা। এখানকার শিক্ষকদের গাইডলাইন, পাঠদান এবং গবেষণার সুযোগ তাকে এক আত্মবিশ্বাসী ও দক্ষ পেশাজীবী হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করে।

বিশ্ববিদ্যালয় পরিসংখ্যান বিষয়ে এই দুই ডিগ্রি শুধু শিক্ষাগত অর্জন নয় বরং এটি বাস্তব জীবনের জটিল সমস্যা গুলো বিশ্লেষণ ও সমাধানের জন্য তার দক্ষতা করে তোলে। এ শিক্ষার মাধ্যমে তিনি একটি সুদূর প্রসারী দৃষ্টিভঙ্গি এবং পরিসংখ্যান প্রয়োগের বহুমুখী দিকগুলো বুঝতে সক্ষম হন।

এম. এম. এইচ. মনিরের শিক্ষা জীবন তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এক বর্ণাঢ্য ও সমৃদ্ধ অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। চাঁদপুর দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়, রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজ এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিজ্ঞতা তার জীবনের ভিত্তি রচনা করেছে এবং সফলতার পথে পরিচালিত করেছেন।

শিক্ষাজীবনের প্রথম ধাপ শুরু হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী চাঁদপুর দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানকার শিক্ষা তাকে শৃঙ্খলা, দায়িত্ববোধ এবং মূলনীতির ভিত্তি দেয়। এরপর আছে সরকারি সিটি কলেজের শিক্ষার আরো একটি ধাপ অতিক্রম করে তিনি ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হন। কলেজ জীবনের চ্যালেন মোকাবেলা এবং নতুন জ্ঞানের সাথে পরিচিত তার মানসিকতা আরো সুদৃঢ় করে।

পরবর্তী সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা তার শিক্ষা জীবনের শিখরে পৌঁছায়। এই প্রতিষ্ঠানে বিএসসি (সম্মান) এবং এমএসসি ডিগ্রী অর্জনের মাধ্যমে তিনি শুরু পরিসংখ্যানের তাত্ত্বিক ও ব্যবহারের দিকে দক্ষতা অর্জন করেননি বরং গবেষণায়ও ও এক বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিবেশ, গবেষণার সুযোগ এবং শিক্ষকদের দিক নির্দেশনা থাকা বিশ্বাসী. দক্ষ এবং দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত একজন মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে।

এই তিনটি প্রতিষ্ঠান অভিজ্ঞতা এবং শিক্ষার মাধ্যমে এম. এম. এইচ. মনির শুধু একাডেমিক সফলতায় অর্জন করেননি বরং নিজেকে একজন সৎ, নিষ্ঠাবান এবং দক্ষ পেশাজীবী এবং সমাজের একজন সচেতন সদস্য হিসেবে গড়ে তুলেছেন। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান তার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় এবং এগুলো সম্মিলিত প্রভাব তাকে ব্যক্তিগত, পেশাগত এবং সামাজিক জীবনে পথপ্রদর্শক হিসেবে ভূমিকা রাখতে সহায়তা করেছে।

চাঁদপুরের ঐতিহ্য, রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের প্রেরণা এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চ শিক্ষা এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের সম্মিলন একটি আত্মবিশ্বাসী ও স্বপ্নময় জীবনের ভিত্তি স্থাপন করেছে। এগুলো তার জীবনের শিক্ষা ও উন্নয়নের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং ভবিষ্যতের পথ চলায় অনুপ্রেরণার উৎস।